সুশীল সমাজ গড়ার অবিরাম প্রত্যয়: দিশারী ফাউন্ডেশন ও আমার স্বপ্ন
✍️ এড মো.সরোয়ার হোসাইন লাভলু
চেয়ারম্যান, দিশারী যুব ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
আমার চোখে একটি সংগঠনের জন্ম তখনই পূর্ণতা পায়, যখন তা স্বপ্ন নয়, বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রত্যয়ে গড়ে ওঠে। ‘দিশারী’ শব্দটি মানেই পথপ্রদর্শক—আর ঠিক সেই অর্থেই জন্ম নেয় দিশারী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, যার মূল দর্শন: সুশীল সমাজ গড়ার অবিরাম প্রত্যয়।
???? প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট
২০০২ সালের ১ জানুয়ারি সূচনা হয় দিশারী ফাউন্ডেশনের। পরে ২০১৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এটি সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৮৬০ এর আওতায় সরকারি নিবন্ধন পায় (রেজি. নম্বর: ৩৩৫৩/IV-06/2013)। এই নিবন্ধিত মূল সংগঠনের অধীনেই গঠিত হয় এর দুটি অঙ্গসংগঠন—দিশারী যুব ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এবং দিশারী সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদ, যা আজ সমাজ-সেবা ও সাংস্কৃতিক জাগরণে অবিচল ভূমিকা রেখে চলছে।
???? দিশারী যুব ফাউন্ডেশনের নতুন অভিযাত্রা
বিগত ২০১৫ সালে সরকার যুব সংগঠন পরিচালনার জন্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করলে আমাদের সংগঠনকে নতুন নামে নতুনরূপে প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন দেখা দেয়। ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর আমরা “দিশারী যুব ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ” নামে নবযাত্রা শুরু করি। এটি শুধু নামের পরিবর্তন ছিল না, ছিল দৃষ্টিভঙ্গি, প্রণোদনা ও কর্মকৌশলের নতুন মাত্রায় উত্তরণ।
২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আমরা গর্বিতভাবে বলতে পারি—সারা বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম অনলাইন যুব সংগঠন হিসেবে আমরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অনলাইন নিবন্ধন অর্জন করি (রেজি. নম্বর: যুউঅ/চট্ট-০১/সীতা-০১)। এটি আমাদের জন্য শুধু একটি স্বীকৃতি নয়, বরং দায়িত্ববোধ ও সেবার পরিধি আরও বিস্তৃত করার প্রেরণা।
???? লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মকাণ্ড
আমাদের লক্ষ্য কেবল উন্নয়ন নয়, বরং “মূল্যবোধসম্পন্ন উন্নয়ন”।
আমরা কাজ করি—
শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে: আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা, সৃজনশীল পাঠদান পদ্ধতি এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক ভয়ভীতি দূরীকরণে।
স্বাস্থ্য সচেতনতা ও সেবায়: মেডিকেল ক্যাম্প, রক্তদান কর্মসূচি, কোভিড মোকাবিলায় জনসচেতনতা ইত্যাদি।
পরিবেশ সংরক্ষণে: বৃক্ষরোপণ, ইকো ট্যুরিজম, বনায়ন, জলবায়ু সচেতনতা কর্মসূচি।
বেকার যুবদের দক্ষতা উন্নয়নে: প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থানের যোগসূত্র, নেতৃত্ব বিকাশ।
সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য উন্নয়নে: সংগীত, আবৃত্তি, নাটক, কবিতা, বইপড়া, সৃজনশীল লেখালেখি এবং পত্রিকা প্রকাশ।
পিছিয়ে পড়া শিশুদের পুনর্বাসন, নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও শান্তিময় সমাজ গঠনে নিরলস প্রচেষ্টা।
???? আমার স্বপ্ন
দিশারী আমার জন্য কেবল একটি সংগঠন নয়—এটি আমার আত্মার অংশ, আমার ভাবনার রূপ, আমার জীবনের এক বৃহৎ প্রত্যয়। আমি স্বপ্ন দেখি এমন একটি সংগঠনের, যা—
তরুণদের গড়ে তুলবে সত্যিকারের সেবক ও নেতা হিসেবে।
সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে নৈতিকতার পতাকা উঁচিয়ে ধরবে।
প্রযুক্তি, শিক্ষা ও সংস্কৃতির সমন্বয়ে গড়ে তুলবে নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় প্রজন্ম।
অন্ধকারে আলোর দিশা দেখাবে—“দিশারী” হয়ে উঠবে সমাজ বদলের নেতৃত্বশীল সংগঠন।
???? শেষ কথা
আমরা যারা দিশারীর সঙ্গে আছি, তারা প্রত্যেকে যেন একটি দীপ্ত শিখা। আর এই শিখাগুলো একসঙ্গে মিলেই জ্বেলে দিতে চাই আলোকিত ভবিষ্যতের প্রদীপ। দিশারীকে আমি দেখি একটি মানবিক বিপ্লবের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে—যেখানে হৃদয়, মেধা ও সাহসী পদক্ষেপের সমন্বয়ে সমাজে আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন।
আমি স্বপ্ন দেখি—দিশারী একদিন হবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃত একটি আদর্শ যুব সংগঠন, যার আত্মিক মন্ত্র হবে:
“আমরা কেবল স্বপ্ন দেখি না—স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিশ্বাস করি।